ছন্নছাড়া জীবন

1 Comment
বাহিরে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে, বৃষ্টির অবিরাম ধারার মত ইমরানের চোখ দিয়ে অবিরাম ধারা বইছে। আজকে ওর পুরোনো মনের কথাগুলো কেন জানি দোলা দিচ্ছে।একটা সময় ইমরান কত সপ্ন দেখতো, লাল, নীল, রঙিন সপ্ন। কিন্তু সেই সপ্ন গুলোই আজ ওর কাছে বিভিশিখাময় সপ্ন। সে একটু বেশিইই আবেগি তাইতো সপ্নগুলো ওকে এখনও তাড়িয়ে বেড়ায়।
ইমরান আর দশটা মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলের মতই অতি সাধারণ একটি ছেলে। ছোট একটি শহর থেকে এস,এস,সি শেষ করে সে আসে ঢাকায় নিজের জীবনটাকে গড়ার জন্য ভর্তি হয় একটি বেসরকারি কলেজে। সেই থেকে শুরু হয় সপ্ন দেখা। একদিন মিরপুর থেকে উত্তরা যাওযার পথে বাসে পরিচয় হয় ওর পুর্নার সাথে, তখন সে সবে ইন্টার দ্বিতীয় ইয়ারের ছাত্র। সে বাসে বসে ছিল অলসতার কারণে একটু ঘুম ঘুম ও লাগছিল ওর। পাশের সিটটা ফাকা।
-'Excuse me' আমি কি এখানে বসতে পারি? পুর্নার কন্ঠ শুনে নিমিষেই সকল অলসতা কেটে যায় ওর।
-হ্যা, বসুন। No problem
এভাবেই শুরু হয় তাদের বন্ধুত্ব। বাসে বসে নিজেদের নাম জানা ছাড়া আর কোন কথাই হয় না ওদের। বাস এসে থামে গন্তব্যে, দুইজন চলে যায় নিজেদের গন্তব্যে। কিন্তু পুর্না যে ওর মনে দোলা দিয়ে গেছে তা ও বুঝতে পারে যখন সে দেখল যে সে নিজের অজান্তেই পুর্নার কথা ভাবছে। সে মনে মনে ভাবে যদি আর একবার ওর সাথে দেখা হত। হঠাৎ, একদিন সে কলেজে পুর্নাকে দেখতে পায়। অনেক ভেবে সে পুর্নাকে ডাকে,
-এই,পুর্না।
-আরে, আপনি এখানে?
-আমি তো এখানেই পড়ি।
-তাই?
-হ্যা।
-আমিও এখানে ভর্তি হলাম।
-আচ্ছা পরে কথা হবে,
বলে চলে গেল পুর্না। এভাবে আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব তারপর প্রেম। কিন্তু নিয়তির পরিহাস, প্রেম করলেই মনে হয় কষ্ট পেতে হয়। একটা বছর অতি আনন্দে কাটার পর হঠাৎ করে পুর্না ইমরানকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। বাধ্য হয়ে ইমরান পুর্না কে বলে তুমি কি আমাকে এড়িয়ে চলতেছ? উত্তরে পুর্না বলে তোমার সাথে আমি continue করতে পারছি না, i am sorry, plz don't disturb me again. .
ওই সময়, খানিকের জন্য ইমরানের পৃথিবীটা স্তন্ধ হয়ে যায়। কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে সে। শুরু হয় ওর পাগলামি। ইমরান তারপর ও পুর্না কে ফোন করে টেক্সট করে কিন্তু ও কোন উত্তর দেয় না মাঝে মাঝে অপমান করে পুর্না । একদিন ইমরান কষ্ট গুলো কে সহ্য করতে না পেরে নিজের হাতের রগ নিজেই কাটে, কিন্তু সবার জন্য বেচে যায় ইমরান, ইমরানের বন্ধু সুলতান পুর্নাকে এগুলো জানালে সে বলে ওই রকম হাত সবাই কাটতে পারে। একটা সময় ইমরান বদলে যায়। কারো সাথে কথা বলে না, কার সাথে মিশে না। এই নিঃসঙ্গ তার মাঝে সে বন্ধু বানায় ফেসবুককে। . ফেসবুকে নতুন কিছু বন্ধু হয় ওর, আস্তে আস্তে সব কিছু ভুলে যায় সে। পড়াশুনা শেষ করে একটা চাকুরীতে ঢুকেছে সে এই সময়ের মাঝে কাউকে কখন ও ভালবাসেনি সে, কারণ একটাই আবার যদি কষ্ট পেতে হয়। এইতো, কালকেই ও পুর্নাকে দেখল অন্য একটি ছেলের সাথে বোটানিক্যাল গার্ডেন এ ঢুকতে।
বাহিরের আকাশে বৃষ্টি থেমে যায় কিন্তু ইমরানের মনের বৃষ্টি থামেনা, এ বৃষ্টি হয়ত থামবে না, অনন্ত কাল ঝরে যাবে।
1 comments for "ছন্নছাড়া জীবন"

আপনার গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করুন।